Breaking

Saturday 30 July 2022

সুয়েজ খাল (Suez Canal) ।। সুয়েজ খালের ইতিহাস ।। মিসরের স্বাধীনতা ও জাতীয় জীবনে সুয়েজ খালের প্রভাব

   সুয়েজ খাল (Suez Canal)

1859-69


সুয়েজ খালের ইতিহাস এবং মিসরের স্বাধীনতা ও জাতীয় জীবনে সুয়েজ খালের প্রভাব

                                        


সুয়েজ খাল খনন প্রকৃতির উপর মানবীয় প্রভাব প্রতিষ্ঠার একটি জীবন্ত নিদর্শন। জলপথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও বানিজ্যে গতি এনেছে সুয়েজ খাল। যদিও ১৯৫২ সালের আগ পযর্ন্ত সুয়েজ খাল মিসরীয় আর্থ-সামাজিক বিকাশে প্রত্যাশিত কল্যাণ না এনে বরং খাল কেটে কুমির আনার প্রকৃষ্ট উদাহরণে পরিনত হয়েছিল। অনেক ত্যাগ স্বীকার করার পর মিসরবাসী ১৯৫৬ সালে এই খালের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ১৯৫৬ সালে এটি জাতীয়করণের ফলে মিসরীয়রা এর সুফল ভোগ করছে। বর্তমান মিসরের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ আশে সুয়েজ খালের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।











   ক. সুয়েজ খালের ইতিহাস (History of Suez Canal):

সুয়েজ খালের ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো। ১৮৯৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিসরীয় ফারাও স¤্রাট ২য় নিকো স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে লক্ষাধিক দাস নিয়ে সুয়েজ খাল খনন শুরু করেছিলেন। কিন্তু অকল্যানের দৈববাণী শুনে তিনি খাল খনন বন্ধ করেদেন। তুর্কি সুলতানের মিসরীয় ওয়ালি মুহাম্মদ পাশা (১৫৬৫-১৫৭৯) সুয়েজ খাল খননের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু মিসরবাসীর মধ্যে প্রচলিত কুসংস্কার, সুলতানের অস্বীকৃতি এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় তিনি তা পরিত্যাগ করেন। ১৭৯৮ সালে নেপোলিয়ন মিসর দখল করলে তিনি স¤্রাট ২য় নিকোর খনন করা প্রাচীন খালটি আবিস্কার করেন এবং সুয়েজখাল খননের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। মুহাম্মদ আলী পাশার নিকট খাল খননের একটি প্রস্তাব আসলে তিনি তা বাতিল করেদেন।


সাঈদ পাশা ক্ষমতাশীন হলে তার ফরাসি বন্ধু ফার্ডিনান্ড ডি লেসেপস এই সুযোগ গ্রহণ করেন। তিনি খালের সুফল নিয়ে সর্বদা সাঈদের সাথে আলোচনা করতেন। অবশেষে ১৮৫৪ সালের নভেম্বর মাসে সাঈদ পাশা এই খাল খননের অনুমতি দেন। কিন্তু শুরু থেকেই বৃটেন ও তুর্কি সুলতান এর বিরোধিতা করতে থাকে।




   খ. সুয়েজ খালের অবস্থান :

সুয়েজ খালের বিশ্বের অতি বিখ্যাত একটি কৃত্রিম সামুদ্রিক খাল। এটি মিসরের সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিমে অবস্থিত। এটি ভুমধ্যসাগরকে লোহিত সাগরের সাথে যুক্ত করেছে এবং এশিয়া থেকে আফ্রিকাকে পৃথক করেছে। বি যোগাযোগ ও বানিজ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন খাল।


   গ. খাল খনন প্রক্রিয়া :

ফার্ডিনান্ড ডি লেসেপস বিভিন্ন দেশের প্রকৌশলীদের সহায়তায় ১৮৫৪ সালে খালের বিস্তারিত নকশা প্রস্তুত করেন। ১৮৫৮ সালে বিশ কোটি ফ্রাংক মুলধন নিয়ে গঠন করা হয় “আন্তর্জাতিক সুয়েজ খাল কোম্পানি”। কোম্পানির মুলধন আট লক্ষ শেয়ারে বিভক্ত করা হয়। ১৮৫৯ সালের ২৫ এপ্রিল মানজাল হ্রদের নিকটবর্তী এলাকায় খনন কাজ শুরু হয়।


   ঘ. মিসরীয় সরকার ও কোম্পানি চুক্তি :

  1. কোম্পানির ১,৭৬,৬০২ টি শেয়র অবিক্রিত থাকে। এগুলো সাঈদ পাশার উপর চাপিয়ে দেয়া হয়।  এসব শেয়ার কারো কাছে বিক্রি করতে পারবেনা মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।

  2. মোট শ্রমিকের পাঁচ ভাগের এক ভাগ মিসরীয় সরকার সরবারাহ করবে।

  3. খালের উভয় তীরে দুই কিলোমিটার পযর্ন্ত জমি কোম্পানির নিকট হস্তান্তর করতে হবে এবং এগুলোর কোন খাজনা দেয়া হবেনা।

  4. খাল এলাকা হতে নীল নদ পর্যন্ত একটি সুপেয় পানির খাল খনন করার দায়িত্ব থাকবে মিসর সরকারের উপর।

  5. খাল রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে মিসর সরকারের উপর।

  6. জাতি, ধর্ম, পতাকা নির্বিশেষে সকলের জন্য সুয়েজ খাল উন্মুক্ত থাকবে এবং চুক্তির মেয়াদ হবে ৯৯ বছর।

  7. নিট মুনাফার ১৫% মিসরীয় সরকার পাবে।


   ঙ. চুক্তির সংশোধনী আহবান :

সাঈদ পাশার পর ইসমাইল পাশা ক্ষমতায় আসলে তুর্কি সুলতান কোম্পানির বিরুদ্ধে কতগুলো বিষয় উল্লেখ করে পত্র লেখেন । এতে তিনি বলেন-


  1. সুয়েজ খাল কেবল বানিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহৃত হবে এ নিশ্চয়তা দিতে হবে।

  2. খালের উভয় তীরের জমি কোন ক্রমেই কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা যাবেনা।

  3. বল পূর্বক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবেনা। 

  4. সুপেয় পানির খাল খননের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।


খেদিভ ইসমাইল নিজেও কোম্পানির কঠিন শতার্দি পছন্দ করতেন না। তিনি চুক্তি সংশোধনের জন্য কোম্পানির উপর চাপ প্রয়োগ করেন। তিনি ২০ হাজার শ্রমিকের স্থলে ৬ হাজার শ্রমিক সরবরাহ করতে রাজি হন। 


   চ. অচলাবস্থার নিরসন:

খেদিভ ইসমাইল (১৮৬৬ সালে তিনি তুর্কি সুলতানের কাছ থেকে ‘খেদিভ’ উপাধি লাভ করেন) এবং তুর্কি সুলতানের আপত্তির কারণে খাল খননে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। বিবাদ মিমাংসার দায়িত্ব দেওয়া হয় ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের উপর। পূর্বের অবস্থান থেকে সরে আসার কারণে জরিমানা হিসেবে ৪ কোটি ৮০ লাখ ফ্রাংক চাপানো হয়। নগদ ৩০ লাখ পরিশোধ করার পর বাকিটা ১৮৯৫ সাল পযর্ন্ত কিস্তিতে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর দ্রুত গতিতে কাজ চলতে থাকে এবং ১৮৬৮ সালে খনন কাজ সমাপ্ত হয়।



   ছ. সুয়েজ খাল উদ্বোধন :

১৮৬৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর খাল উদ্বোধনের দিন ধার্য করা হয়। ফরাসি স¤্রাজ্ঞী ইউজেনি, ইউরোপের রাজন্যবর্গ, অস্ট্রোহাঙ্গেরির সম্রাটফ্রান্সিস জোসেফ, প্রাশিয়ার যুবরাজ, রাশিয়ার জার সবাই ফেরাউন-ক্লিউপেট্টার দেশ, পিরামিড আর নীল নদের দেশ মিসরের মহান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হন। আন্তর্জাতিক মানের সাজ-সজ্জা আর আনন্দঘন পরিবেশে সুয়েজ খালের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ফরাসি সম্রাজ্ঞী ইউজেনি। খেদিভ ইসমাইলের মনোবাসনা পূর্ণ হয়, তিনি এখন বিশ্বের গণ্যমান্য শাসকদের একজন।


সুয়েজ খাল খননের পূর্বে ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথ 


সুয়েজ খাল চালু হওয়ার পর ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথ 



   জ. সুয়েজ খাল ও মিসরের ঋনের বোঝা :

১৮৬৩ সালে সাঈদের মৃত্যুর সময় মিসরের ঋণের পরিমান ছিল ১ কোটি ৪০ লক্ষ পাউন্ড। ইসমাইল ক্ষমতায় আসলে শ্রমিক সরবরাহ এবং সুপেয় পানির খাল খনন বন্ধ করার জরিমানা শোধ করতে তিনি ৫৭ লক্ষ পাউন্ড ঋণ গ্রহন করেন। শেয়ার ক্রয় ছাড়াও মিসর খাল খনন বাবদ ১ কোটি ৮০ লক্ষ পাউন্ড ব্যয় করে। এছাড়া তুলা চাষ ও পানি সরবরাহ করার জন্য ৩০ লক্ষ পাউন্ড এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ও পশু আমদানি করতে প্রায় ৫০ লক্ষ পাউন্ড খরচ হয়। সুয়েজ খাল উদ্বোধন বাবদ খরচ হয় ৪০ লক্ষ পাউন্ড যার সবটাই ছিল ঋণ। ১৮৭৬ সালে মিসরের ঋনের পরিমান দাড়ায় ৬৮ মিলিয়ন পাউন্ড। এ সকল ঋণ ইউরোপীয় শক্তি বর্গ থেকে নেয়া হয়। এভাবে ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো মিসরকে ঋণের জালে আবদ্ধ করে ফেলে এবং মিসরীয় রাজনীতিতে তাদের অনুপ্রবেশ ঘটে। 

আরও পড়ুন- মুহাম্মদ আলী পাশা এবং  আধুনিক মিসর  



   ঝ. বৃটেনের অনুপ্রবেশ :

বৃটেন শুরু থেকেই ফরাসিদের সহায়তায় খাল খননে সমর্থন দেয়নি এবং নানাভাবে এর বিরোধতিা করতে থাকে। কিন্তু খাল সফলভাবে চালু হলে তারা নতুন ভাবে চিন্তা শুরু করে এবং কী ভাবে খালে অংশীদারিত্ব স্থাপন করা যায় সে সম্পর্কে সুযোগ খুঁজতে থাকে। ১৮৭৫ সালে তারা সে সুযোগ পেয়ে যায়। মিসরের হাতে ১,৭৬,৬০২ টি শেয়ার ছিল যা ছিল মোট শেয়ারের ৪৪%। চরম অর্থ সংকটে পড়ে খেদিভ ইসমাইল শেয়ারগুলো বিক্রি করতে আগ্রহী হন। এ সুযোগ লুফে নেয় বৃটেন।


সংসদে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ইয়াহুদি শিল্পপতি রথচাইল্ডকে শেয়ার ক্রয়ে বিনিয়োগ করার নির্দেশ দেন। মাত্র ৪০ লক্ষ পাউন্ডের বিনিময়ে খেদিভ ইসমাইল মিসরীয় শেয়ারগুলো বিক্রি করেদেন। প্রথমদিকে খাল খননে একমত না হয়ে বৃটেন যে রাজনৈতিক সুবিধা হারায় এই শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে তারা তা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এরপর বৃটেন মিসরীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে এবং সুয়েজ খাল মিসরের জাতীয় সমস্যায় পরিনত হয়। 


   ঞ. বৃটেনের মিসর দখল :

মিসর সত্যিই খাল কেটে কুমির এনেছে। যে কুমির মিসরে প্রবেশ করেছে তা হলো বৃটেন। অর্থনৈতিক দেওলিয়াত্ব খেদিভ ইসমাইলের পতন ডেকে আনে। ইউরোপীয় পরাশক্তিদের ঋণের জাল থেকে তিনি কোন মতেই বের হতে পারছিলেন না। অবশেষে ১৮৭৯ সালে তুর্কি সুলতান খেদিভ ইসমাইকে সরিয়ে দিয়ে তার ছেলে তওফিক পাশাকে মিসরের খেদিভ নিযুক্ত করেন । ১৮৮২ সালে মে মাসে বৃটেন ফরাসিদের সহায়তায় মিসরীয় জাতীয়তাবাদীদের পরাস্ত করে মিসর দখল করে নেয় । আগস্ট মাসে তারা সুয়েজ খালের উপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে এবং মিসর ও সুদান বৃটিশ কর্তৃত্বে চলে যায়। 


   ট. মিসরীয় স্বাধীনতা ও সুয়েজ খাল:

প্রথম বিশ^যুদ্ধের সময় এ খালের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বৃটেন। এদিকে মিসরে জাতীয়তাবাদ বিকশিত হতে থাকলে ১৯২২ সালে বৃটেন চারটি বিষয় হাতে রেখে মিসরকে একতরফা স্বাধীনতা দেয়। কিন্তু সুয়েজ খালের নিরঙ্কুশ আধিপত্য তারা ধরে রাখে। এরপর ১৯৩৬ সালে বৃটেন মিসরকে পুরোপুরি স্বাধীনতা দিলেও সুয়েজ খালের কর্তৃত্ব ছাড়েনি। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধেও তারা নিজেদের পক্ষে সুয়েজ খালের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে। এভাবে ১৯৫৬ সালের আগ পযর্ন্ত তারা মিসরের সবকিছু ছাড়লেও সুয়েজ খালের নিয়ন্ত্রন ছাড়ে নাই। 


   ঠ. সুয়েজ খাল জাতীয়করণ :

১৯৫২ সালে সামরিক বিপ্লবের মাধ্যমে মিসরের ক্ষমতায় আসেন জাতীয়তাবাদী নেতা জামাল আব্দুল নাসের। এদিকে মিসর সরকার আসওয়ান বাধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল । কিন্তু মিসর বিশ^ রাজনীতিতে রাশিয়ার

দিকে ঝুকে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন বাধ নির্মাণের আর্থিক সহযোগিতা প্রত্যাহার করে। এর ফলে নাসের সংকটে 

পতিত হন। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে অর্থ সংগ্রহের জন্য নাসের সুয়েজ খাল জাতীয় করণের ঘোষণা দেন। ১৯৫৬ সালের ২৬ জুলাই নাসের সুয়েজ খাল জাতীয়করণ করেন। তখন থেকে এটি মিসরের জাতীয় সম্পদে পারিনত হয়।


   ড. সুয়েজ সংকট (Suez Crisis) ও যুদ্ধ : 

নাসের কর্তৃক সুয়েজ খাল জাতীয়করণ করা এবং ইজরাইলি জাহাজ বন্ধ করে দেওয়ার প্রেক্ষিতে তৈরি হয় সুয়েজ সংকট। ইজরাইল, বৃটেন ও ফ্রান্স ঐক্যবদ্ধ ভাবে মিসরের উপর হামলা চালায়। ইজরাইল সিনাই উপদ্বীপ দখল করে। মিসরের উপর এরকম হামলা বিশ^ব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠে এবং মিসরের পক্ষে সহানুভুতি ও বিশ্ব জনমত তৈরি হয়। যুদ্ধকালে মিসর সুয়েজ খালে কতগুলো জাহাজ ডুবিয়ে দিয়ে তা চলাচলের অযোগ্য করে দেয়। অবশেষে জাতি সংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতি স্বাক্ষরিত হয় এবং সুয়েজ খাল মিসরের জাতীয় সম্পদে পরিনত হয়। ডুবিয়ে দেওয়া জাহাজগুলো অপসারণ করা হয় এবং ১৯৫৭ সালের এপ্রিলের পর আবার খালে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। নৌ চলাচল নিরাপদ করা এবং সিনাই উপদ্বীপে শান্তি রক্ষার জন্য এখানে জাতি সংঘের একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।



    ঢ. নতুন সুয়েজ খাল: 

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ সুয়েজ খালের সমান্ততরালে 37  কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাইপাস লেন তৈরি করেছে।  যেটাকে বলা হচ্ছে নতুন সুয়েজ খাল বা দ্বিতীয় লেন। পাশাপাশি সুয়েজ খালের গভীরতা আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন এই বাইপাস লেন তৈরি করার ফলে সুয়েজখালে জাহাজের অপেক্ষার সময় অনেক কমে আসবে।18 ঘন্টার পরিবর্তে জাহাজগুলোকে 11 ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে । বর্তমানে সুয়েজ খাল দিয়ে দৈনিক 49 টি জাহাজ চলাচল করে ।  মিসরীয় সরকার আশা করছে যে, এই লেন সম্পূর্ণরূপে চালু হলে 2023 সাল নাগাদ সুয়েজ খাল দিয়ে দৈনিক 97টি জাহাজ চলাচল করতে পারবে এবং সুয়েজ কাল থেকে মিশরের রাজস্ব 530 কোটি থেকে বেড়ে 1120 কোটি তে উন্নীত হবে।



সুয়েজ খাল খননে মিসরীয়দের যে ক্ষতি হয়েছিল বৃটেন এখানে প্রবেশের পর তাদের আরো বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই খাল খননে বহু মিসরীয় শ্রমিক মারা গিয়েছিল, এর ব্যয় বহন করতে গিয়ে মিসর দেউলিয়া হয়েছিল, এই খালের জন্যই মিসরীয়রা তাদের স্বাধীনতা হারিয়েছিল। সুতরাং সুয়েজ খাল মিসরেরই জাতীয় সম্পদ এবং এর আর্থিক সুবিধা তাদেরই প্রাপ্য। মিসর রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে লাভবান হলেও বাস্তবে গোটা বিশ্বই সুয়েজ খাল দ্বারা লাভবান হচ্ছে। এ খাল হাজার হাজার মাইল পথ কমিয়ে দিয়েছে, ফলে কমে গেছে পরিবহন খরচ। বানিজ্যে এসেছে গতি। সেজন্য বলাহয় আপনি বিশ্বের যেখানেই থাকুন না কেন আপনি সুয়েজ খাল দ্বারা উপকৃত হচ্ছেন।



আরও পড়ুন-

তানজিমাত কী ? তানজিমাত যুগে অটোমান তুরস্কে গৃহীত সংষ্কারাবলী কী ছিল ?





Md. Billal Hossain

B.A. Honors (1st Class 4th), M.A. (1st Class 2nd), University of Dhaka

BCS General Education

Lecturer

Department of Islamic History & Culture

Chandpur Govt. College, Chandpur.






 

 







No comments:

Post a Comment