Breaking

Tuesday, 5 July 2022

প্রাক-মুসলিম মালয় জগতের উপর ভারতীয় ও চৈনিক প্রভাব: স্বরূপ ও তাৎপর্য

 প্রাক-মুসলিম মালয় জগতের উপর ভারতীয় ও চৈনিক প্রভাব:                                     স্বরূপ ও তাৎপর্য



ভ্যতা এবং সংস্কৃতি একটি প্রবহমান ও গতিশীল প্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট কোন এলাকাতে সীমাবদ্ধ থাকেনা। উন্নত সভ্যতা সংস্কৃতি সহজেই তার পার্শ্ববর্তী অনউন্নত সভ্যতা এবং সংস্কৃতিকে গ্রাস করে এবং সেখানে বিস্তার লাভ করে। প্রাক মুসলিম মালয় জগতের উপর এশিয়ার দুটি বৃহৎ পরাশক্তি  ভারতবর্ষ এবং চীনের প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অর্থনীতি রাজনীতি সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে ভারত এবং চীনের ভারত উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। মানব সভ্যতার বিকাশে নরগোষ্ঠী সমূহের মধ্যকার পারস্পরিক আদান-প্রদান ও গ্রহণ-বর্জন একটি বিশেষ প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে আর সেই প্রক্রিয়া অনুসারী হয়তোবা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভারতীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করেছিল।  


Victor Purcell বলেন-


The two major  civilization of the far east, India and China had their indelible imprint on the earlier states of Southeast Asia(1)





দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত ও চীনের প্রভাব এর স্বরূপ দক্ষিণ-পূর্বে তৎকালীন বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতা ভারত ও চীনের মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ার কারণে এই দুটি দেশের দ্বারা প্রভাবিত হয় ছিল অনিবার্য সেজন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এবং ধর্ম, সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ভারত লক্ষণীয়।


দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপর ভারত ও চীনের প্রভাব সম্পর্কে Victor Purcell বলেন, ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায় যে খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দি থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় প্রভাব এতই প্রবল ছিল যে তার তার বিস্তীর্ণ অঞ্চল কে তার বিস্তীর্ণ অঞ্চল Indiansed অঞ্চল নামে এবং চীনের প্রভাবাধীন অঞ্চল Sinicized বলে পরিচিত ছিল


আবার ঐতিহাসিক J.F কেঁদে ভারতীয় এই প্রভাবকে Hinduaized বলে উল্লেখ করেছেন। তবে DGE Hall এবং অন্যান্য ঐতিহাসিকগণ তার  মতের বিরোধিতা করেছেন।


নিচে মালয় জগতের উপর ভারত ও চৈনিক প্রভাব আলাদা ভাবে আলোচনা করা হলো



ভারতীয় প্রভাব


  1. বাণিজ্যিক প্রভাব

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপর প্রথম শতাব্দী থেকেই ভারতীয় প্রভাব লক্ষণীয় প্রথম শতাব্দীতে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল রোমানদের সাথে কিন্তু মুসলমানদের দ্বারা মিশর দখল হলে ভারতের সাথে রোমানদের সম্পর্ক শিথিল হয়ে যায় অন্যদিকে বাণিজ্য মুদ্রা পাচার রোধ করার জন্য চীন বৈদেশিক বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে রোমানরা প্রাচ্যের স্বর্ণ বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এতে ভারত বাধ্য হয়ে তার বাণিজ্য পদ পরিবর্তন করে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ে ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে


তবে ব্রেইন হ্যারিসন বলেন খ্রিস্টপূর্ব 600 সাল থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্য যোগাযোগ ছিল ভারতের একজন প্রাচীন ঐতিহাসিক বলেন 


কেউ যদি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জাভা দ্বীপ ভ্রমণ করতেন তাহলে তিনি আর ফিরে আসতে চাইছেন না যদি ফিরে আসতেন তাহলে তুই এত পরিমাণ অর্থ নিয়ে আসছেন যে তার চারটি বংশ সেই অর্থ দিয়ে প্রতিফলিত করতে পারতেন


এছাড়া মহাভারতে Yava Dvipa (জাভা), Subarna Dvipa (সুমাত্রা) এই শব্দগুলোর উল্লেখ পাওয়া যায় এতে প্রমাণিত হয় যে বহু আগে থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্য যোগাযোগ ছিল তবে সরাসরি বাণিজ্য যোগাযোগ হয় প্রথম শতকে


Sardesai সারদেশ্বরী এবং J.F কেঁদে এটা কবের কথা স্বীকার করেছেন ভারতের বিরাট প্রভাবের কথা স্বীকার করেছেন তারা এটাকে Iindianised এবং Hinduased বলে উল্লেখ করেছেন  কেননা হিন্দু ধর্মের অনেক কিছুই সেখানে প্রসারতা লাভ করেছিল অনেকে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বণিকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল এ বিষয়ে DGE Hall বলেন-


Certainly, the number of images of Buddha of Amaravati School that are associated with the earliest archaeological sites showing Indian influences are significant. (2) 



ভারতীয় প্রভাব সম্পর্কে নতুন বিতর্ক: 

1926 সালে গবেষণার জন্য গঠিত A Greater Indian society এর সদস্য R.C মজুমদার যতীন্দ্রনাথ বোস, পি.সি বাগচী এবং সি.সি বার্গ নতুন বিতর্ক জন্ম দিয়েছেন। আর. সি মজুমদার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কে ইন্ডিয়ান কলোনি বলে অভিহিত করেছেন এবং  অন্যরা তা সমর্থন করেছেন।  কিন্তু আধুনিক গবেষণার মাধ্যমে D.G.E Hall এ মতবাদকে ভারতীয় অতিরিক্ত জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছেন। কেননা ভারত কখনোই ঐ অঞ্চল রাজনৈতিক বা সামরিকভাবে জয় করেনি। 


মুসা আনসারী বলেন-

এতদঞ্চলে ভারতীয় প্রভাব ছিল সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক নয়। এখানে ভারতীয় চারটি উপাদান আমদানি করা হয়। যেমন-


  1. রাজতন্ত্র 

  2. সংস্কৃত ভাষা (স্থানীয় সাহিত্য উন্নয়নের জন্য)

  3. ধর্মীয় আইনশাস্ত্র 

  4. ধর্মগ্রন্থ (রামায়ণ মহাভারত ও পুরাণের কাহিনী ও আর্যদের রাজপরিবারের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃত পুস্তক আমদানি)


2. ধর্মীয় প্রভাব:

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ধর্মীয় ক্ষেত্রে ভারতীয় প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট। স্থানীয় বহু নেতৃবৃন্দ হিন্দু ধর্ম গ্রহণ ও হিন্দু উপাধি ধারণ করেছে।  তৃতীয় শতকে এখানে সম্রাট অশোকের অভিযান এর প্রমাণ পাওয়া যায়। সেজন্য এখানে বহু বৌদ্ধ দেখা যায় এবং বৌদ্ধ বিহার রয়েছে। 


চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে মালয় জগতে গুজরাট হতে ইসলামের প্রবেশ ঘটে এবং ধীরে ধীরে তা শক্তিরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়।  দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনগণ তা গ্রহণ করে। এরপর থেকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার অগ্রগতি অব্যাহত থাকে। এভাবে ভিয়েতনাম ব্যতীত গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ধীরে ধীরে ভারতীয় প্রভাব বিস্তৃত হয়েছে। 



সংস্কৃতি ধারণে সর্তকতা: 

উল্লেখ্য যে অতি সতর্কতার সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ করা হয়। তারা ভারতীয় সংস্কৃতির সুনির্বাচিত অংশগ্রহণ করে । ভারতীয় অনেক কিছু তারা গ্রহণ করলেও নিজেদের ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। যেমন ব্রাহ্মণবাদ গ্রহণ করলেও বর্ণবাদ গ্রহণ করেনি। নারীর উচ্চমর্যাদাও সেখানে ক্ষুন্ন হয়নি কোনদিন। 


Victor Purcell বলেন-

“They borrowed from India or China without losing the basic structure of their societies” (3)


দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় প্রভাব এর মাধ্যম বা বাহনঃ


D.G.E Hall এবং ক্যাঁদে এই সকল সংস্কৃতির আমদানির নানারকম মাধ্যমের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। যেমন- 


  1. সামরিক অভিযানের মাধ্যমে:

সি.সি বার্গ তার ক্ষত্রিয় তত্ত্বের বর্ণনায় বলেন যে, ভারতবর্ষ থেকে যুদ্ধ উপলক্ষে সৈনিকেরা এখানে এসে স্থানীয়দের বিবাহ করে পরিবার গড়ে তোলেন। ফলে এখানে একটি মিশ্র রক্তের সমাজ গড়ে ওঠে এবং ভারতীয় সংস্কৃতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু আধুনিক গবেষণায় দেখা যায় যে একাদশ শতাব্দীতে চোল রাজাদের আক্রমণ ব্যতীত এখানে আর কোনো সামরিক অভিযানের প্রমাণ পাওয়া যায় না। 


  1. অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে: 

N.J Krom তার  বৈশ্য তত্ত্বের আলোচনায় বলেন যে,  ভারতীয় বণিকরা ব্যবসা বাণিজ্য উপলক্ষে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়  যেত। কিন্তু মৌসুমী বায়ুর কারণে তাদেরকে সেখানে কিছুদিন অবস্থান করতে হতো। দীর্ঘকাল অবস্থানের কারণে তাদের অনেকেই স্থানীয়  রমণীদের বিবাহ করে বসতি স্থাপন করে ফলে ধীরে ধীরে এখানে ভারতের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।


তবে DGE Hall এ মতের বিরোধিতা করেছেন.তিনি বলেন-

One thing is certain that, Indian culture was not brought to Southeast Asia by waves of immigrants. (4)


  1. বাণিজ্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে: 

J.F ক্যাঁদে  বানিজ্য তত্ত্বের আলোকে বলেছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে ভারতীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে।


কিন্তু জে. লিউর বাণিজ্য  ও বণিকদের ভূমিকা নাকচ করে দিয়েছেন।  তিনি মনে করেন নিম্নবর্ণের বণিকদের দ্বরা এখানে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রসার ঘটেনি । কেননা এ অঞ্চলে প্রসারিত সংস্কৃতি ছিল ভারতীয় উচ্চবংশীয় ব্রাহ্মণদের।  


সকল দিক বিবেচনায় 1952 সালে স্থানীয় প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে; দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় ভাবধারা আমদানিতে স্থানীয় রাজা, রাজদরবারের আমাত্যদের  উদ্যোগই প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। 


তবে এখানে আমরা বণিকদের অবদানকে একেবারেই অস্বীকার করতে পারিনা। ভারতীয় প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে বণিকদের বড় রকমের ভূমিকা ছিল। 


  1. স্থানীয় শাসকদের প্রয়োজনে: 

অনেকের মতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় শাসকবর্গ নিজেদের প্রয়োজনেই ভারত থেকে সংস্কৃতিকে আমদানি করেছেন অভিজাতদের অনেকেই ভারতে বিদ্যা অর্জনের জন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করেছিল তাই এখানে ভারতীয় প্রভাব বিদ্যমান।

DGE Hall বলেন-

Indian influence spread there mainly through Indonesian initiative in animating such elements of Indian Culture as them rather than, as a result of an Indian effort at cultural expansion. (5)



দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপর চৈনিক প্রভাব


দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপর চীনের প্রভাব ছিল প্রধানত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক। খ্রিস্টপূর্ব ২০০ সাল থেকেই চীনের সাথে এসব অঞ্চলের যোগাযোগ ছিল


Barbara W. Andaya & Leonard  Andaya বলেন-

“From A.D 200 its began to extend its influence into the north Malay Peninsula and Chinese and envoys to funds make vague mention of the 100 kingdoms which existed to the south.” (6)



তবে অনেকে এখানে চীনের প্রভাব নিয়ে মতবিরোধ করেছেন বাধা হিসেবে তারা চীনের বাণিজ্যিক অনীহা পৃষ্ঠপোষকতা না থাকা, নৌ-বিদ্যায় পারদর্শী না হওয়া, কনফুসিয়াসবাদ এর সীমাবদ্ধতা এবং শ্রেণীভেদের কথা উল্লেখ করেছেন


  1. Tributary System (ট্রিবুটারি সিস্টেম):

প্রকৃত ব্যাপার হল বাণিজ্যের মাধ্যমে চীনের সাথে মালয় জগতের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তা মালয়রাই প্রথমে  শুরু করেছিল। Zhaow, Hung, Ming রাজবংশের শাসকেরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর উপর চাইনিজ Tributary System নামে এক প্রকার কর প্রবর্তন করেছিল। তিন বছর পর পর তা আদায় করা হতো। বিনিময়ে চীন সরকার রাষ্ট্রগুলোকে পণ্য এবং নিরাপত্তা দিতে


  1. উপহার গ্রহণ: 

আরো প্রমাণিত হয় যে বহু আগে থেকেই মালয়ের বহু রাষ্ট্র থেকে চীনা দরবারের উপহার ও রাষ্ট্রদূত পেরণ করা হতো। জাভা, মালাক্কাও শ্যাম (থাইল্যান্ড) এর  রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপ ছিল।  চীনা সেনাবাহিনী একবার এখানে পাগান ধ্বংস করে দেয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে চীনা সেনাবাহিনী জাভার একটি রাজবংশের পতন ঘটায়। পঞ্চদশ শতাব্দীতে চীনা সেনাবাহিনী মালাক্কার পক্ষ নিয়ে শ্যাম (থাইল্যান্ডের)  বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ।এভাবেই চীনারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক প্রভাবের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে। 


Dr. Sardesai বলেন- 

“China succeeded in making a great impact up on all of Southeast Asia in the  political sphere” (7)


  1. ভিয়েতনাম দখল: 

চীনা সেনাবাহিনী খ্রিস্টপূর্ব 221 সালে  ভিয়েতনাম দখল  করলে এখানে চীনের রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে। ফলে চীনের প্রভাব শক্তিশালী হয়।  দীর্ঘমেয়াদী চীনা শাসনাধীনে শোষিত হওয়ার ফলে ভিয়েতনামে চৈনিক প্রভাব প্রকটভাবে লক্ষ্য করা যায়। দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে ভিয়েতনাম চীন থেকে স্বাধীন হলেও তাদের প্রভাবশালী নিজস্ব কোন ঐতিহ্য, সংস্কৃতি না থাকায় তারা চীনা অনুকরণে সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলে। সেজন্য ভিয়েতনামে রাজনৈতিক প্রভাবের সাথে সাথে চীনের সংস্কৃতির প্রভাব স্থায়ীভাবে থেকে যায় ।


এখানে-

  1. চীনা  ধাচেঁ প্রশাসন ব্যবস্থা চালু হয় 

  2. চীনা মহিষ দিয়ে হাল চাষ করা হতো এবং

  3. চীনা ধাতব পাত্রের ব্যবহার হতো

  4. Hung আমলে এখানে চীনা  মাটির পাত্রের প্রচলন হয়েছিল । 


তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে চীনের রাজনৈতিক প্রভাব শক্তিশালী হলেও সাংস্কৃতিক প্রভাব কম ছিল। 



4. ধর্মীয় প্রভাব

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় চীনা বৌদ্ধ ধর্মের  প্রভাব ছিল কার্যকর। এখানে বৈদ্ধ ধর্মের মহাযানবাদের চর্চা হতো। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পর থেকে অভিজাত শ্রেণী ব্রাহ্মণ্যবাদ ও মহাযান মতবাদকে অপসারণ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হীনযান মতবাদ প্রবেশ করতে থাকে। আধুনিক মিয়ানমার থাইল্যান্ড লাওস ও কম্বোডিয়ায় হীনযানবাদ প্রধান জীবন্ত ধর্ম হিসেবে স্বীকৃত। 



উপসংহার:

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নিজস্ব স্বকীয়তা থাকলেও ভৌগোলিকভাবে দুটি বৃহৎ শক্তির  সংস্পর্শে আসায় ভারত ও চীনের সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব এখানে স্থায়ী হয়েছিল।  ইসলামের আগমন এর মাধ্যমে মালয় জগতে এই দুই সভ্যতার প্রভাব হ্রাস পেতে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সংস্কৃতি বহিরাগত তথা ভারত ও চীনের সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পরিপুষ্টি লাভ করেছে। তাছাড়া ভৌগোলিক বিচারে এবং একই মৌসুমী আবহাওয়ার অধিবাসী হওয়ার কারণে পরস্পর পরস্পরের মাধ্যমে প্রভাবিত  হওয়াই ছিল স্বাভাবিক। 


Victor Purcell বলেন-

“Anthropologists have remarked that  throughout the monsoon lands there is the unity of culture with seasonal festivals which  preceded  the civilization of Aryan Indian and left its make on the civilization of China” (8)




No comments:

Post a Comment