Breaking

Monday, 24 October 2022

ক্রিমিয়ার যুদ্ধ : ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলোর স্বার্থের সংঘাত


ক্রিমিয়ার যুদ্ধ (1854-56)

The Crimean War

[ কারণ, ঘটনা, ফলাফল ও সমালোচনা ]



ক্রিমিয়ার যুদ্ধ (1854-56) ছিল পূর্ব ইউরোপে উদ্ভুত  প্রাচ্যসমস্যার একটি অংশ। 1815 সালের ভিয়েনা কংগ্রেসের পরে কার্যত 40 বছর ইউরোপে শান্তি বিরাজ করছিল। ক্রিমিয়ার যুদ্ধ সেই শান্তি বিনষ্ট করে, যদিও এর কারণ ছিল খুবই তুচ্ছ। উসমানীয় সাম্রাজ্যের দুর্বলতা হে তু তাদের ইউরোপীয় অংশে পরাশক্তিগুলোর আধিপত্য বিস্তারের যে প্রতিদ্বন্দিতা তারই প্রেক্ষিতে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। রাশিয়ার জার  নিকোলাস (I) উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে তুরস্ককে ইউরোপের রুগ্ন মানব হিসেবে আখ্যায়িত করে তা ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার জন্য ইংল্যান্ডের কাছে প্রস্তাব পেশ করেন। অন্যদিকে এশিয়া এবং আফ্রিকায় বৃটেনের স্বার্থ জড়িত থাকায় সে সর্বদা তুরস্কের অখন্ডতার পক্ষে ছিল। পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার আধিপত্যবাদী  এরকম মনোভাবের কারণেই ব্রিটেন ও ফ্রান্স তুরস্কের পক্ষে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্রিমিয়ার যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই যুদ্ধে প্রত্যেকটি শক্তির -ই-বিশেষ স্বার্থ জড়িত ছিল। এছাড়া রাশিয়া এবং ফ্রান্সের মধ্যে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় কর্তৃত্বের লড়াই এই যুদ্ধের আরেকটি কারণ। এই যুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে রাশিয়া পরাজিত হয় এবং তুরস্ক সাম্রাজ্যের আসু পতন রোধ হয়। তবে ক্রিমিয়ার যুদ্ধেও পাচ্যসমস্যার সমাধান হয়নি। 







আরও পড়ুন-
প্রাক-মুসলিম মালয় জগতের উপর ভারতীয় ও চৈনিক প্রভাব: স্বরূপ ও তাৎপর্য


ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণসমূহ 

রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দিতা, ধর্মীয় কলহ, স্বার্থান্বেষী মনোভাব, হিংসাত্মক কার্যকলাপ ইত্যাদিসহ যেসকল কারণে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয় তা নিম্নরুপ-


  1. তুরস্ক ব্যবচ্ছেদের প্রস্তাব:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের মৌলিক কারণ হচ্ছে রাশিয়ার জার নিকোলাস কর্তৃক তুরস্ককে ব্যবচ্ছেদ তথা ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার প্রস্তাব। জার  নিকোলাস আশঙ্কা করেছিলেন যে, ফ্রান্স হয়তোবা তুরস্ক সাম্রাজ্যের একটি বড় অংশ দখলের চেষ্টা করছে। সেজন্য 1844 সালে রাশিয়ার যার প্রথম নিকোলাস ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন, তখন তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড এবার্ডিনকে বোঝান যে, সকল ইউরোপীয় শক্তি যদি তুরস্কের অখন্ডতা, শক্তি-সামর্থ্য বজায় রাখে তাহলে তিনি সেখানে বাধা দিবেন না। কিন্তু যদি কোনো বিশেষ শক্তি (ফ্রান্স) তুরস্ক দখলের চেষ্টা করে তার আগেই তিনি তুরস্ক ব্যবচ্ছেদ করবেন। আর উসমানীয় সাম্রাজ্য ভাগ-বাটোঁয়ারা করে নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি ইংল্যান্ডকে প্রধান অংশীদার হিসেবে পেতে চান।  তবে বৃটেন রাজি না হলে তিনি কখনোই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন না। 


  1. বৃটেনের বিরোধীতা:

অটোমান সাম্রাজ্য কে এরকম ব্যবচ্ছেদ করার প্রস্তাব ইংল্যান্ড নাকচও করেনি আবার গ্রহণও করেনি। বৃটেন হয়তো সৌজন্যবশত মৌন ছিল কিন্তু  নিকোলাস সেটাকে ইতিবাচক মনে করেছিলেন। বৃটেন তুরস্ককে এরকম ভাগ-বাঁটোয়ারার প্রস্তাবে তো রাজি ছিলই না বরং রাশিয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইংল্যান্ডের মনে গভীর সংশয়ের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বৃটেনের সম্মতি রয়েছে মনে করে নিকোলাস 1852 সালের দিকে তুর্কি অধ্যুষিত মোলদাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া  দখল করে নিলে ইংল্যান্ড প্রকাশ্য বিরোধিতা শুরু করে। এই বিরোধিতাই শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়। 




  1. ধর্মীয় কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ:

1774 সালে স্বাক্ষরিত কুচুককাইনারজির চুক্তির ভিত্তিতে বলকান অঞ্চলের অটোমান সাম্রাজ্যের অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করে রাশিয়া। অন্যদিকে ফ্রান্স 1740 সালে এক চুক্তির মাধ্যমে যীশু খ্রিস্টের জন্মস্থান জেরুজালেমের গ্রোটোসহ তুর্কি অধ্যুষিত বলকান অঞ্চলের খ্রিস্টানদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করে। । ইতিমধ্যে ফরাসি বিপ্লব হেতু ফ্রান্স দুর্বল হয়ে পড়লে রাশিয়া এসব অঞ্চলে তারা অভিভাবকত্ব বিস্তার করে। ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন 1740 সালের চুক্তি অনুযায়ী জেরুজালেমের গ্রোটো গির্জার কর্তৃত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য 1852 সালে তুর্কি সুলতান আব্দুল মজিদকে বাধ্য করেন। এতে রাশিয়া ক্ষুব্ধ হয়। 



  1. মোলদাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া  দখল:

 রাশিয়া জেরুজালেমের গ্রোটো গির্জার কর্তৃত্ব ফিরিয়ে দেয়া এবং পূর্ব  ইউরোপে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হস্তান্তরের  জন্য তুর্কি সুলতান কে চাপ দিলে তুর্কি সুলতান তা অস্বীকার করেন। এই অজুহাতে রাশিয়া তুর্কি সাম্রাজ্যের অধিকারে থাকা মোলদাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া দখল করে নেয়। এই দখলদারিত্ব রুশ-তুর্কি যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি করে। 


  1. বৃটেনের যুদ্ধ উন্মাদনা 

1815 সালের ভিয়েনা কংগ্রেসের পর থেকে ইউরোপে তেমন কোন যুদ্ধ হয়নি। তাই ব্রিটেন ও ফ্রান্স যেকোনোভাবে একটি যুদ্ধ বাধিয়ে দেওয়ার পক্ষে ছিল। 1944 সালে নিকোলাস তুরস্ক ভাগ বাটোয়ারা করার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সে প্রস্তাবের বিপরীতে 1853 সালে ইংল্যান্ড তার নেতিবাচক মত প্রকাশ করে। ইংল্যান্ডের প্রভাবশালী মন্ত্রী লর্ড পামারস্টোন তিনি যে কোনোভাবে যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। তার দৃষ্টিতে যেহেতু রাশিয়া-তুরস্ককে আক্রমণে সর্বদায় উন্মুখ সেজন্য তাকে একটি প্রবল সামরিক চপেটাঘাত না করলে রুশ সরকার তাদের গো ছাড়বে না। পামার স্টোনের যুদ্ধংদেহী নীতি এবং ব্রিটিশ প্রভাবশালী পত্রিকাগুলোর রুশবিরোধী প্রচারণা এ যুদ্ধের অন্যতম কারণ। পত্রিকাগুলো প্রচার করে যে, রাশিয়া পূর্ব ইউরোপ গ্রাস করে ভূমধ্যসাগরের পথে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের পথ বন্ধ করতে উদ্যত হয়েছে। এসব কারণে ইংল্যান্ডে যুদ্ধ উন্মাদনা দেখা দেয়। 



  1. নিকোলাসের প্রতি তৃতীয় নেপোলিয়নের অসন্তুষ্টি:

ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন রাশিয়ার জার নিকোলাসের প্রতি ব্যক্তিগত ভাবে মনঃক্ষুণ্ণ ছিলেন। তৃতীয় নেপোলিয়ন কে সম্রাট হিসেবে রাশিয়া স্বীকৃতি দিলেও চিঠিপত্রে নিকোলাস তৃতীয় নেপোলিয়নকে যথাযথ সম্মান দিতেন না। তৃতীয় নেপোলিয়ন বংশানুক্রমিকভাবে সম্রাট না হওয়ায় তাকে জার নিকোলাস তাচ্ছিল্য করতেন। সেজন্য-


  1. ধর্মীয় কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ;

  2. ব্যক্তিগত আক্রোশ;

  3. চমকপ্রদ পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে ফরাসি জনগণকে মাতিয়ে রেখে  স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং 

  4. ইংল্যান্ডের মিত্রতা অর্জন করা।

ইত্যাদি কারণে ফ্রান্স ক্রিমিয়ার যুদ্ধে যোগদান করে। 


  1. ভিয়েনা  নোটের অপব্যাখ্যা:

অস্ট্রিয়ার মধ্যস্থতায় 1853 সালে ভিয়েনাতে ইউরোপীয় শক্তিবর্গের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে ‘ভিয়েনা নোট’ নামে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে তুরস্কের খিষ্টান প্রজাবর্গের উপর রাশিয়ার কর্তৃত্ব স্বীকার করা হয় কিন্তু এর অতিরিক্ত কিছু রাশিয়া নিতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়।কিন্তু নিকোলাস প্রস্তাবটি নিজের মতো ব্যাখ্যা করে মোল্দাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া ত্যাগ করতে অস্বীকার করে। ফলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ক্ষুব্ধ হয় এবং সম্মিলিত ভাবে তুরস্কের পক্ষে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।  


  1. রাশিয়াকে চূড়ান্ত শাস্তি প্রদান:

ব্রিটেন ও ফ্রান্স সম্মিলিতভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে রাশিয়া তাৎক্ষণিকভাবে মোলদাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া  থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের করতে সম্মত হয়। এর মাধ্যমে যুদ্ধের প্রধান কারণ দূরীভূত হলেও কৃষ্ণসাগরে রুশ প্রধান হ্রাস এবং ভবিষ্যতে রাশিয়া যাতে তুরস্কে অধ্যুষিত পূর্ব ইউরোপে আক্রমণ পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য রাশিয়াকে সমুচিত শাস্তি দেওয়ার জন্য ব্রিটেন ও ফ্রান্স যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। 





আরও পড়ুন-



ইউরোপীয় শক্তিগুলোর পারস্পরিক স্বার্থ


ক্রিমিয়ার যুদ্ধের প্রকৃত অর্থ বুঝতে হলে এটা বুঝতে হবে যে,ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ তথা বৃটেন, ফ্রান্স,  প্রাশিয়া (জার্মানী) সার্ডেনিয়া ও পিপমন্ড (ইটালি), অস্ট্রিয়া ইত্যাদি রাষ্ট্রসমূহ যুদ্ধে অংশগ্রহণ  করা বা না করা উভয়ের পেছনেই তাদের স্বার্থ জড়িত ছিলেন। যেমন-


  1. বৃটেনের স্বার্থ:

ব্রিটেন পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সম্প্রসারণ নীতির বিরোধী ছিল। উত্তর আফ্রিকায়, এশিয়ার মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতে বৃটেনের অত্যন্ত লাভজনক উপনিবেশ ও স্বার্থ রয়েছে। ব্রিটেন মনে করে যদি রাশিয়া পূর্ব ইউরোপ এবং তুরস্কে সামরিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে  তাহলে যেকোনো সময় সে উত্তর আফ্রিকা মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতে তাদের উপনিবেশগুলো কে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। এতে ইংল্যান্ডের স্বার্থ নষ্ট হবে। সেজন্য ইংল্যান্ড বরাবরই তুরস্কের অখন্ডতা নীতির পক্ষে ছিল। ইউরোপের রুগ্ন মানব তুরস্ককে বৃটেন তাদের স্বার্থে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।  


  1. ফ্রান্সের স্বার্থ:

যিশুখ্রিস্টের স্মৃতিবিজড়িত জেরুজালেমের খ্রিস্টান উপাসনালয়গুলোর নেতৃত্ব এবং পূর্ব ইউরোপের খ্রিস্টানদের নেতৃত্ব নিয়ে রাশিয়ার সাথে ফ্রান্সের  বিরোধ তৈরি হয়। তৃতীয় নেপোলিয়ন মনে করেন এসব অঞ্চলে রাশিয়ার ধর্মীয় আধিপত্যবাদ খর্ব করতে পারলে ফ্রান্সের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে । এছাড়া নিকোলাস এর প্রতি ফরাসি সম্রাট এর ব্যক্তিগত শত্রুতা এবং পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার আধিপত্যবাদকে বিনাশ করে স্বীয় গৌরব বৃদ্ধি করা ছিল ফ্রান্সের উদ্দেশ্য। 



  1. ইতালির (সার্ডেনিয়া ও পিপমন্ড) স্বার্থ:

ইতালি নামে তখনও একক কোন রাষ্ট্র গঠিত হয়নি। উত্তর ইটালিতে অস্ট্রিয়ার কর্তৃত্ব, মধ্য ইতালিতে পোপের শাসনসহ ইতালি অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত ছিল। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শক্তিশালী অঞ্চল ছিল সর্ডেনিয়া-পিপমন্ড। জোসেফ মাজিনি,কাউন্ট ক্যাভুর এবং জোসেফ গ্যারিবল্ডির নেতৃত্বে ইতালির ঐক্য আন্দোলন শুরু হয়। সার্ডিনিয়া-পিপমন্ডের প্রধানমন্ত্রী কাউন্ট ক্যাভুর মিত্র বাহহিনীকে 18000 সৈন্য পাঠিয়ে  ভবিষ্যতে ইতালির ঐক্য আন্দোলনে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সহযোগিতা লাভের পথ উন্মুক্ত করেন। 



  1. অস্ট্রিয়ার স্বার্থ:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়ার শংকিত হবার বেশ কারণ ছিল। রাশিয়া এবং তুরস্ক উভয়ই ছিল অস্ট্রেলিয়ার নিকটতম প্রতিবেশী। এই দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধ অস্ট্রিয়া নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতে পারে। এছাড়া অস্ট্রিয়া পূর্ব ইউরোপে রুশ আধিপত্যবাদের বিরোধী ছিল। ফলে নিজের নিরাপত্তার জন্য অস্ট্রিয়া সরাসরি এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও শত্রুতামূলক নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করে।  


  1. প্রাশিয়ার (জার্মানী) স্বার্থ:

তখনো বর্তমান জার্মানী গঠিত হয়নি। প্রাশিয়া নামে জার্মান সাম্রাজ্য অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত ছিল। ভবিষ্যৎ জার্মানির  ঐক্যকরণ  আন্দোলন  শুরু হলে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার সাথে যুদ্ধ অনিবার্য হবে। অন্যদিকে বড় প্রতিবেশী রাশিয়ার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। ভবিষ্যৎ জার্মানী ঐক্যকরণ আন্দোলনে রাশিয়ার সহযোগিতার জন্য বিসমার্কের পরামর্শে জার্মানি নিরপেক্ষ থাকে। অবশ্য জার্মানির এ উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল, কেননা পরবর্তীতে জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে রাশিয়ার সহায়তা পেয়েছিল। 



আরও পড়ুন-

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস রচনার উৎসসমূহ



ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ঘটনা প্রবাহ 


প্রথম পর্যায়:

বৃটেনের পরামর্শে রাশিয়া তুরস্ক নিয়ন্ত্রিত মোল্দাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া থেকে রুশ সৈন্য অপসারণের জন্য চরমপত্র দেয়।  নিকোলাস সুলতানের চরমপত্র অগ্রাহ্য করলে 1854 সালের 27 মার্চ তুরস্ক রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। অতঃপর মিত্রবাহিনী তুরস্কের পক্ষে যোগদান করে। মিত্র বাহিনীর যুদ্ধ ঘোষণার পর রাশিয়া মোলদাভিয়া  ও ওয়ালাসিয়া থেকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়। এতে যুদ্ধের প্রধান কারণ দূরীভূত হয়। 



দ্বিতীয় পর্যায়

মোল্দাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া থেকে সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার পরেও মিত্রবাহিনী যুদ্ধ বন্ধ করার পক্ষপাতী ছিল না। কেননা তারা রাশিয়াকে চূড়ান্তরূপে পরাজিত না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। ফলে যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয় এ সময় মিত্রবাহিনী কৃষ্ণ সাগরের উপকূলবর্তী ক্রিমিয়া রাজ্যের সিভাস্তিপোল  বন্দরে বিমান হামলা চালিয়ে তা বিধ্বস্ত করে। 1854 সালের দিকে মিত্রশক্তি ক্রিমিয়া দখল করে নেয়। 


এদিকে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পূর্বেই প্রথম নিকোলাসের মৃত্যু হয় এবং রাশিয়ার ক্ষমতায় আসেন জার (২য়) আলেকজান্ডার। আলেকজান্ডার  যুদ্ধ চালিয়ে যেতে লাগলেন কিন্তু মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া তার জন্য সম্ভব ছিল না। এ সময়ে অস্ট্রিয়া  রাশিয়াকে বেশ কিছু শর্ত সম্বলিত একটি চরমপত্র দিয়ে সন্ধির মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রস্তাব দিলে রাশিয়া তা গ্রহণ করে।  অতঃপর 1856 সালে প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের অবসান ঘটে। 


প্যারিস চুক্তি 1856

1856 সালে সম্পাদিত প্যারিস চুক্তির 32 টি ধারার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো হচ্ছে-

  1. প্যারিস চুক্তি সম্পাদনের দিন থেকেই চুক্তি স্বাক্ষরিত দেশগুলোর মধ্যে শান্তি ও বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে।

  2. প্যারিস চুক্তিতে তুরস্কের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতার স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং তুরস্কের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইউরোপীয় কোন শক্তি হস্তক্ষেপ করবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। 

  3. মোলদাভিয়া ও ওয়ালাসিয়া তুরস্ক সাম্রাজ্যের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে থাকবে। 

  4. কৃষ্ণসাগর নিরপেক্ষ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বসফরাস প্রণালী বাণিজ্য জাহাজ চলাচলে  সকল জাতির জন্য  সমানভাবে উন্মুক্ত থাকবে।

  5. যুদ্ধের সময় কৃষ্ণ সাগর ও দার্দানেলিস প্রণালী সকলের নিকট সমভাবে বন্ধ থাকবে।

  6. দানিয়ুব নদী সকল জাতির জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

  7. কৃষ্ণ সাগর ও দার্দানেলিস উপকূলে রাশিয়া এবং তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন নিষিদ্ধ করা হয়।

  8. রাশিয়া দখলকৃত বেসারাবিয়া তুরস্ককে ছেড়ে দিবে।

  9. রাশিয়া তুরস্ক সাম্রাজ্যের গোড়া খ্রিস্টানদের অভিভাবকত্ব পরিত্যাগ করে।

  10. তুরস্ককে ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ে যোগদান করতে এবং ইউরোপীয় আন্তর্জাতিক আইনের অধীন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

  11. তুরস্কের সুলতান তার সাম্রাজ্যের খ্রিস্টান প্রজাদের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে এবং সকল  ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়। 


 আরও পড়ুন-

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার  বৈচিত্রে ঐক্য।। Unity In Diversity of South-East Asia।।




ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফল:

  1. রাশিয়ার আধিপত্য হ্রাস:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার আধিপত্যবাদের অবসান ঘটে। ইউরোপীয় রাজনীতিতে রাশিয়ার প্রতিপত্তি ও সম্মান বহুলাংশে ক্ষুন্ন হয়। যখন-তখন তুরস্ক সাম্রাজ্য আক্রমণ করার প্রয়াস সাময়িকভাবে হলেও বন্ধ হয়। 


  1. তুরস্কের নতুন জীবন লাভ:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছিল তুরস্ক। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সহায়তায় রাশিয়ার পরাজয়ের মাধ্যমে ইউরোপের রুগ্ন মানব তুরস্ক আরো কিছুদিন বেঁচে থাকার সুযোগ পায়। প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে তুরস্ক রুশ আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা পেয়ে এক নতুন জীবন লাভ করে এবং খ্রিস্টান প্রজাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে। তুরস্ক ইউরোপীয় শক্তি সমবায় এর সদস্যপদ লাভ করে। 


  1. তৃতীয় নেপোলিয়নের মর্যাদা বৃদ্ধি:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের মর্যাদা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। তিনি ফরাসি সাম্রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য যে চেষ্টা করেছিলেন তাতে সফল হন। তিনি এর মাধ্যমে 1815 সালের ওয়াটারলু যুদ্ধের পরাজয়ের কলঙ্ক মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। অল্প সময়ের জন্য হলেও তিনি  বৃটেনের বন্ধুত্ব লাভ করতে সক্ষম হয়।


  1. বৃটেনের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির হ্রাস:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী খুব বেশি নৈপুন্যতা দেখাতে পারেনি। এ যুদ্ধের ফলে ইংল্যান্ড ইউরোপে বন্ধুহীন হয়ে পড়ে। অবশ্য ইউরোপের বৃহত্তর স্বার্থে ইংল্যান্ডের এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যুদ্ধের পর এটা প্রমাণিত হয় যে সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ ও দেশ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সামর্থ্য থাকলেও ইউরোপীয় মহাদেশে স্থলযুদ্ধে তেমন তৎপরতা বা শক্তি দেখানো মত ক্ষমতা বৃটেনের ছিলনা। 


  1. ইংল্যান্ডের ঋণগ্রস্ততা:

সামরিক ক্ষতির পাশাপাশি এই যুদ্ধে বৃটেনের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়। বিশাল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির ফলে ব্রিটেন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যদিও এই যুদ্ধ থেকে পিছু হটার তার কোনো উপায় ছিল না।


  1. রাশিয়ার পুনর্জাগরণ:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। তৃতীয় নেপোলিয়নের শত্রুতার ফলে রাশিয়া প্রাশিয়া তথা ভবিষ্যৎ জার্মানির দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ায়। রাশিয়া ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তার কর্তৃত্ব বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে। পরাজয়ের পেছনে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থা  বহুলাংশে দায়ী ছিল সেই কথা উপলব্ধি করে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার সংস্কারের অংশ হিসেবে সার্ফ তথা ভূমি দাসদের মুক্তি দেন। এই দৃষ্টিতে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ রাশিয়ার পশ্চাৎপদতা দূরীভূত করে আধুনিকায়নে ভূমিকা রেখেছে। 



  1. ইতালির ঐক্যে অগ্রযাত্রা:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে কাউন্ট ক্যাভুরের মিত্র বাহিনীতে যোগদান এবং সৈন্য প্রেরণ তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় বহন করে। তার উদ্দেশ্য ছিল ক্রিমিয়ার যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করে ইতালির স্বাধীনতা আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত করা এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সহযোগিতা করা। এরই অংশ হিসেবে প্যারিস সম্মেলনে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন ইতালি একত্রীকরণের প্রস্তাব সমর্থন করেন।   বস্তুত ফ্রান্সের সাহায্য ব্যতিত ইতালি একত্রীকরণ সম্ভব ছিল না। 


  1. জার্মানির ঐক্য:

ইতালি একত্রীকরণের জন্য যেমন ফ্রান্স ও বৃটেনের সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল তেমনি জার্মানি একত্রিত করানোর জন্য রাশিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন ছিল। ভবিষ্যৎ সমর্থন লাভের জন্যই বিসমার্কের নির্দেশেই রাশিয়া ক্রিমিয়ার যুদ্ধে নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করে। অটো ভন বিসমার্ক যখন জার্মানির একত্রীকরণ এর জন্য ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন তখন রাশিয়া ও নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করে  ফলে জার্মানি একত্রীকরণ সহজ হয়। 


  1. অস্ট্রিয়ার রাজনৈতিক ক্ষতি:

অস্ট্রিয়া প্রথমদিকে শত্রুতামূলক নিরপেক্ষতা গ্রহণ করলেও যুদ্ধের শেষ দিকে এসে ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়।  এতে অস্ট্রিয়ার প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয় এবং তার মর্যাদাও নষ্ট হয়। অস্ট্রিয়ার এই নীতির ফলে প্রাশিয়া-অস্ট্রিয়া যুদ্ধে রাশিয়া নিরপেক্ষ থাকে। ফলে অটোভন বিসমার্ক এর কাছ  অস্ট্রিয়া পরাজিত হয়। 


  1. আর্থিক ও সামরিক বিশাল ক্ষতি:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধে মিত্রশক্তি এবং রাশিয়ার বিপুল পরিমাণ সামরিক ও আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়। এই যুদ্ধে প্রায় 5 লক্ষ সামরিক বেসামরিক লোক হতাহত হয়।  


  1. The lady with the lamp:

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের একটি বিশেষ আবিষ্কার হচ্ছে দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প খ্যাত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর আত্মপ্রকাশ। এই ব্রিটিশ তরুণী আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং একটি স্বেচ্ছাসেবিকা দল গঠন করেন।  এর ফলে আহত ব্রিটিশ সৈন্যদের মৃত্যুর হার 44%  থেকে ২% এ হ্রাস পায়। 




আরও পড়ুন-

রেজা শাহ পাহলভী এবং ইরানের আধুনিকায়নে তাঁর অবদান




ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সমালোচনা


ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। ঐতিহাসিক ডেভিড টমসন বলেন - ”এটি ছিল একটি বানানো যুদ্ধ, সম্ভবত অপ্রয়োজনীয়, অনেকাংশে মূল্যহীন; কিন্তু এর অপরিকল্পিত  ও অভাবনীয় ফলগুলো ছিল গভীর ও মূল্যবান।” ফরাসি রাজনীতিবিদ থিয়ার্স মন্তব্য করেন যে, ”কয়েকজন হতভাগ্য সন্ন্যাসীকে গ্রোটোর গির্জার চাবি হস্তান্তর করার জন্য ক্রিমিয়ার যুদ্ধ বাঁধানো হয” ‘  আধুনিক ঐতিহাসিক A.J.P ট্রেইলারের মতে - ”ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ইউরোপের স্বার্থের জন্যই সংগঠিত হয়েছিল, তুরস্কের স্বার্থে জন্য নহে” । ঐতিহাসিক ম্যারিয়ট এর মতে ক্রিমিয়ার যুদ্ধকে যদি অপরাধ বলে অভিহিত করা নাও হয় তবুও ইহা একটি বিরাট ভুল হইয়াছিল এবং চেষ্টা করলেই এই যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হইতো সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। কোন কূটনীতিকদের মতে- ‘ক্রিমিয়ার যুদ্ধে  ব্রিটেন ভুল ঘোড়ার উপর বাজি রাখিয়াছিল’। তবে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফলাফল তেমন আশাব্যঞ্জক না হলেও এর  পরোক্ষ  ফলাফল ছিল অত্যন্ত সুদুরপ্রসারী। .


পরিশেষে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ বাহ্যিক দৃষ্টিতে অপ্রয়োজনীয় বা গৌণ মনে হলেও ইউরোপের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর প্রয়োজন ছিল। ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পরোক্ষ ফল হিসেবে রুশ আধিপত্যবাদের বিনাশ ঘটেছে, তুরস্ক নতুন জীবন পেয়েছে, ইতালি ও জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। রাশিয়ায় ভূমিদাসরা মুক্তি পেয়েছে, তুরস্ক ও রাশিয়ায় সংস্কার সাধিত হয়েছে এবং ইউরোপে স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটেছে। এসব কারণেই ঐতিহাসিকগণ এই যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ প্রাচ্য সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান করতে পারেনি যা পরবর্তীতে আরো অনেক সংঘাতের সৃষ্টি করেছে এবং বলকান অঞ্চলের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছে। 




আরও পড়ুন-




[ প্রিয় পাঠক,

যে কোন ভূল-ত্রুটির সংশোধনী বা পরামর্শ থাকলে  ওয়েব সাইটে পোস্টের নিচে কমেন্ট বক্সে লিখুন। ইসলামের ইতিহাস, স্বাধীন-বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস,  ইসলামের বিধি-বিধান সংক্রান্ত কোন প্রবন্ধ বা সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে লেখা কোন প্রবন্ধ প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখা এবং পরিচিতিসহ  মেইল করুন। ]


Md. Billal Hossain

B.A. Honors (1st Class 4th), M.A. (1st Class 2nd), University of Dhaka

BCS General Education

Lecturer

Department of Islamic History & Culture

Chandpur Govt. College, Chandpur.






No comments:

Post a Comment